আপনি কি জানেন যে আপনার বিনিয়োগ আপনাকে কর সাশ্রয় করতে সাহায্য করতে পারে? হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন! বাংলাদেশে এমন অনেক বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে যা আপনাকে আয়কর থেকে রেহাই দিতে পারে অথবা আপনার প্রদেয় করের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। একজন বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারী হিসেবে, এই সুযোগগুলো সম্পর্কে জানা এবং সেগুলোকে কাজে লাগানো আপনার আর্থিক পরিকল্পনায় একটি বিশাল পরিবর্তন আনতে পারে।
এই ব্লগ পোস্টে, আমরা বাংলাদেশে কর সুবিধা সংক্রান্ত আইনি কাঠামো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের কর ছাড়যোগ্য বিনিয়োগ এবং সেগুলোর সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা আপনাকে দেখাব কিভাবে আপনি এই বিনিয়োগগুলোকে আপনার ট্যাক্স বোঝা কমাতে এবং একই সাথে আপনার আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যবহার করতে পারেন।
বাংলাদেশে কর সুবিধা সংক্রান্ত আইনি কাঠামো: একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
বাংলাদেশে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ (Income Tax Ordinance, 1984) এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন বিধিমালা ও প্রজ্ঞাপনগুলো কর সুবিধা সংক্রান্ত বিনিয়োগের মূল ভিত্তি। প্রতি বছর বাজেট ঘোষণার সময় সরকার এই বিষয়ে নতুন নির্দেশনা বা পরিবর্তন নিয়ে আসে। একজন করদাতা হিসেবে, আপনার উচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) এর ওয়েবসাইট এবং নিয়মিতভাবে প্রকাশিত গেজেটগুলো অনুসরণ করা যাতে আপনি সর্বশেষ নিয়মকানুন সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন।
সাধারণত, কর ছাড় বা রিবেট পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিনিয়োগ বা ব্যয়ের উপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ করযোগ্য আয়ের উপর ছাড় পাওয়া যায়। ধারা 44(2) এবং ষষ্ঠ তফসিল, পার্ট A, আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪, এই ধরনের বিনিয়োগ এবং ব্যয়ের তালিকা সরবরাহ করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা জরুরি:
- সর্বোচ্চ সীমা: কর ছাড়ের জন্য বিনিয়োগের একটি নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ সীমা থাকে, যা সাধারণত করযোগ্য আয়ের একটি শতাংশ হিসেবে নির্ধারিত হয় (বর্তমানে 25% এবং সর্বোচ্চ 1 কোটি টাকা)।
- রিবেট হার: বিনিয়োগকৃত অর্থের উপর একটি নির্দিষ্ট হারে কর রেয়াত (tax rebate) প্রদান করা হয়। এই হার সাধারণত মোট বিনিয়োগকৃত অর্থের 15% এর কাছাকাছি থাকে (তবে পরিবর্তন সাপেক্ষ)।
- নিয়মিত আপডেট: কর আইন এবং নীতিগুলি নিয়মিত পরিবর্তিত হয়, তাই সর্বশেষ তথ্য সম্পর্কে অবগত থাকা অপরিহার্য।
এখন আসুন, বিভিন্ন ধরনের কর ছাড়যোগ্য বিনিয়োগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক:
১. জাতীয় সঞ্চয়পত্র: নিরাপদ এবং কর-সাশ্রয়ী বিনিয়োগ
জাতীয় সঞ্চয়পত্র বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং নিরাপদ বিনিয়োগ বিকল্পগুলির মধ্যে একটি। সরকার কর্তৃক পরিচালিত হওয়ায় এতে ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে, যেমন:
- পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র: এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এর সুদের হার তুলনামূলকভাবে বেশি।
- তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র: যারা নিয়মিত আয়ের সন্ধান করেন, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত।
- পরিবার সঞ্চয়পত্র: নারী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং শারীরিক অক্ষম ব্যক্তিরা এটি কিনতে পারেন।
- পেনশনার সঞ্চয়পত্র: শুধুমাত্র অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ এটি কিনতে পারেন।
কর সুবিধা: জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকৃত অর্থের উপর নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত কর রেয়াত পাওয়া যায়। এছাড়া, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উপর উৎসে কর কর্তন করা হয়, তবে নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত এই মুনাফা আয়করমুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, পাঁচ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্রের মুনাফা নির্দিষ্ট একটি সীমা পর্যন্ত আয়করমুক্ত থাকে। এই সীমা পার হলে, মুনাফার উপর 10% উৎসে কর কাটা হয়, যা চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য হয়।
সুবিধা:
- উচ্চ সুদের হার
- বিনিয়োগের নিরাপত্তা
- নিয়মিত আয় (কিছু সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে)
- কর রেয়াত সুবিধা
২. পেনশন স্কিম: অবসরের নিরাপত্তা ও বর্তমানের কর ছাড়
পেনশন স্কিম, বিশেষ করে সরকার অনুমোদিত পেনশন তহবিল বা প্রভিডেন্ট ফান্ডে (যেমন, ভবিষ্য তহবিল – Provident Fund) বিনিয়োগ করা হলে তা কর রেয়াতের জন্য যোগ্য হয়। সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের কর্মচারীদের জন্য এই সুবিধা প্রযোজ্য।
- ভবিষ্য তহবিল (Provident Fund): সরকারি ও কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা তাদের ভবিষ্য তহবিলে যে অর্থ জমা দেন, তার একটি অংশ কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হয়। এমনকি, নিয়োগকর্তার অবদানও নির্দিষ্ট শর্তে করমুক্ত হতে পারে।
- স্বীকৃত পেনশন তহবিল: কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের জন্য স্বীকৃত পেনশন তহবিল পরিচালনা করে, যেখানে অবদান রাখলে কর সুবিধা পাওয়া যায়।
- সর্বজনীন পেনশন স্কিম (Universal Pension Scheme): সম্প্রতি চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন স্কিমও কর সুবিধা পাওয়ার একটি ভালো সুযোগ। এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে এবং নির্দিষ্ট বয়সসীমার পরে পেনশন গ্রহণ করলে তা কর ছাড়ের আওতায় আসবে।
কর সুবিধা: পেনশন তহবিলে কর্মচারীর অবদান এবং নিয়োগকর্তার অবদান (নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত) উভয়ই করযোগ্য আয় থেকে বাদ দেওয়া যায়। অবসরের সময় পেনশন বা গ্র্যাচুইটি হিসেবে প্রাপ্ত অর্থও নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত আয়করমুক্ত থাকে।
সুবিধা:
- অবসরের পর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
- নিয়মিত আয়ের উৎস (অবসরের পর)
- বর্তমান আয়কর হ্রাস
৩. জীবন বিমা প্রিমিয়াম: সুরক্ষাও দেয়, করও বাঁচায়
জীবন বিমা শুধুমাত্র আপনার পরিবারকে আর্থিক সুরক্ষা দেয় না, এটি আপনাকে কর সাশ্রয় করতেও সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার নিজের, আপনার স্ত্রী/স্বামী বা আপনার সন্তানের জীবন বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ করেন, তবে সেই প্রিমিয়াম কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হয়।
কর সুবিধা: জীবন বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ করা হলে, নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত সেই প্রিমিয়াম করযোগ্য আয় থেকে বাদ দেওয়া যায়। সাধারণত, বার্ষিক আয়ের 20% বা প্রিমিয়ামের 10% (যাহা কম) পর্যন্ত কর রেয়াত পাওয়া যায়।
মনে রাখবেন: মেয়াদপূর্তিতে বা দাবি পরিশোধের সময় প্রাপ্ত বিমা অর্থ, যদি নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে, তবে তা আয়করমুক্ত হতে পারে।
সুবিধা:
- পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা
- দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়
- কর রেয়াত সুবিধা
৪. মিউচুয়াল ফান্ড: বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগে কর ছাড়
মিউচুয়াল ফান্ড হলো এমন একটি বিনিয়োগ মাধ্যম যেখানে অনেক বিনিয়োগকারীর অর্থ একত্রিত করে স্টক, বন্ড এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়। বাংলাদেশে অনেক মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে যা কর সুবিধা প্রদান করে। বিশেষ করে, যে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো “Approved Superannuation Fund” বা “Approved Provident Fund” হিসেবে বিবেচিত হয়, সেগুলোতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়া যায়।
কর সুবিধা: সরকার অনুমোদিত মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে সেই বিনিয়োগের উপর কর রেয়াত পাওয়া যায়। এছাড়া, মিউচুয়াল ফান্ড থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ বা ক্যাপিটাল গেইন নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত আয়করমুক্ত থাকে।
সুবিধা:
- বিনিয়োগের বৈচিত্র্যকরণ
- পেশাদার ফান্ড ব্যবস্থাপনা
- তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকি (বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগের কারণে)
- কর সুবিধা
৫. যাকাত/দান: ধর্মীয় কর্তব্য পালনের সাথে কর ছাড়
ইসলাম ধর্মানুসারে যাকাত প্রদান করা একটি বাধ্যতামূলক ধর্মীয় কর্তব্য। বাংলাদেশে, সরকার কর্তৃক স্বীকৃত যাকাত তহবিলে প্রদত্ত যাকাত এবং জনকল্যাণমূলক উদ্দেশ্যে প্রদত্ত দান (যেমন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি) কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হয়।
কর সুবিধা: আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর 44(2) ধারায় উল্লিখিত বিভিন্ন তহবিলে প্রদত্ত দান কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হয়। এই দানের একটি নির্দিষ্ট অংশ বা আপনার মোট আয়ের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ (যেমন, 10% বা 25% এর মধ্যে) করযোগ্য আয় থেকে বাদ দেওয়া যায়।
সুবিধা:
- ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ব পালন
- কর রেয়াত সুবিধা
৬. ট্যাক্স রিবেট ক্লেইম করার পদ্ধতি: ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া
ট্যাক্স রিবেট ক্লেইম করা একটি সরল প্রক্রিয়া, তবে কিছু নিয়মাবলী অনুসরণ করা জরুরি।
ক. দলিল ও প্রমাণ সংরক্ষণ:
ট্যাক্স রিবেট ক্লেইম করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনার বিনিয়োগ এবং ব্যয়ের সকল প্রকার দলিল ও প্রমাণাদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা। এর মধ্যে রয়েছে:
- জাতীয় সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে: সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের মূল কপি এবং প্রাপ্ত মুনাফার সনদপত্র।
- পেনশন স্কিমের ক্ষেত্রে: বেতন স্লিপ যেখানে প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পেনশন তহবিলে আপনার অবদান উল্লেখ আছে, অথবা তহবিল থেকে প্রাপ্ত বার্ষিক বিবরণী।
- জীবন বিমা প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে: বিমা পলিসির কপি এবং প্রিমিয়াম পরিশোধের রসিদ।
- মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে: বিনিয়োগের সনদপত্র এবং প্রাপ্ত লভ্যাংশের বিবরণী।
- যাকাত/দানের ক্ষেত্রে: যে প্রতিষ্ঠানকে দান করেছেন তাদের থেকে প্রাপ্ত রসিদ, যেখানে প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, এবং আপনার প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) যেকোনো সময় আপনার কাছে এসব কাগজপত্রের মূল কপি দেখতে চাইতে পারে, তাই সেগুলো যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করুন।
খ. ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নে উল্লেখ করা:
আপনার বার্ষিক আয়কর রিটার্ন (Income Tax Return) ফরম পূরণ করার সময়, আপনাকে কর ছাড়ের জন্য যোগ্য বিনিয়োগ এবং ব্যয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশে (সাধারণত “Schedule 25A” বা “Investment Allowance”) এই তথ্যগুলো উল্লেখ করতে হবে।
- সঠিক কোড ব্যবহার: NBR এর আয়কর ফরমগুলোতে বিভিন্ন বিনিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট কোড থাকে। নিশ্চিত করুন যে আপনি সঠিক কোড ব্যবহার করছেন।
- সঠিক পরিমাণ উল্লেখ: আপনার বিনিয়োগের সঠিক পরিমাণ এবং তারিখ উল্লেখ করুন।
- গণনা: আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, আপনার মোট বিনিয়োগের উপর ভিত্তি করে কর রেয়াতের পরিমাণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে গণনা করা হবে।
আপনি চাইলে একজন পেশাদার ট্যাক্স উপদেষ্টার সাহায্য নিতে পারেন, বিশেষ করে যদি আপনার আর্থিক পরিস্থিতি জটিল হয়। তারা আপনাকে সঠিক রিটার্ন ফাইল করতে এবং সর্বোচ্চ কর সুবিধা পেতে সাহায্য করতে পারে।
পরামর্শ ও সতর্কতা: স্মার্ট বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস
ট্যাক্স সাশ্রয়ের জন্য বিনিয়োগ একটি চমৎকার উপায়, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা জরুরি:
- বিনিয়োগের উদ্দেশ্যকে অগ্রাধিকার দিন: শুধুমাত্র ট্যাক্স ছাড়ের জন্য বিনিয়োগ করবেন না। আপনার দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক লক্ষ্য, ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা এবং রিটার্নের প্রত্যাশা বিবেচনা করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার অবসরের জন্য সঞ্চয় করা প্রধান লক্ষ্য হয়, তাহলে পেনশন স্কিম আপনার জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে।
- ঝুঁকি মূল্যায়ন করুন: প্রতিটি বিনিয়োগের নিজস্ব ঝুঁকি রয়েছে। সঞ্চয়পত্র তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হলেও, মিউচুয়াল ফান্ডে বাজার ঝুঁকি জড়িত থাকে। আপনার ঝুঁকি সহনশীলতা অনুযায়ী বিনিয়োগ করুন।
- তারল্য বিবেচনা করুন: কিছু বিনিয়োগ (যেমন সঞ্চয়পত্র) একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লক-ইন থাকে। আপনার অর্থের প্রয়োজন কখন হতে পারে তা বিবেচনা করুন এবং সে অনুযায়ী বিনিয়োগ করুন।
- সর্বশেষ আইন সম্পর্কে অবগত থাকুন: কর আইন এবং নীতিমালা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট নিয়মিত দেখুন অথবা একজন পেশাদার ট্যাক্স উপদেষ্টার সাথে পরামর্শ করুন।
- রেকর্ড রাখুন: উপরে উল্লিখিত সকল প্রমাণপত্র এবং রশিদ যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করুন। এটি যেকোনো অডিট বা যাচাই-বাছাইয়ের সময় আপনাকে সাহায্য করবে।
- বৈচিত্র্য আনুন: আপনার বিনিয়োগকে বিভিন্ন খাতে ছড়িয়ে দিন। এটি ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে এবং আপনার পোর্টফোলিওকে শক্তিশালী করবে।
উপসংহার
বাংলাদেশে ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যায় এমন বিনিয়োগের সুযোগগুলো আপনার আর্থিক পরিকল্পনায় একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। জাতীয় সঞ্চয়পত্র, পেনশন স্কিম, জীবন বিমা প্রিমিয়াম, মিউচুয়াল ফান্ড এবং যাকাত/দানের মতো বিকল্পগুলো আপনার কর বোঝা কমাতে এবং একই সাথে আপনার ভবিষ্যতের জন্য একটি মজবুত আর্থিক ভিত্তি তৈরি করতে সহায়তা করবে। একজন সচেতন বিনিয়োগকারী হিসেবে, এই সুযোগগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে সেগুলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগান। মনে রাখবেন, সঠিক বিনিয়োগ কৌশল এবং সঠিক রেকর্ড রাখা আপনাকে আপনার আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে এবং সর্বোচ্চ কর সুবিধা লাভে সহায়তা করবে। আজই আপনার বিনিয়োগ পরিকল্পনা শুরু করুন এবং আপনার অর্থ সাশ্রয়ের এই স্মার্ট উপায়গুলো থেকে লাভবান হন!